শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
আমিনুল হক সিপন ::
নির্দিষ্ট সময় পেড়িয়ে গেলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে চলমান হাওর রক্ষা প্রকল্পের কাজ এগোয়নি।কয়েকটি প্রকল্পে এখন ও পুরোদমে মাটি ফেলা হয়নি। এমতাবস্থায় আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় প্রকল্পের সময় সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন সময়সীমায় কতটুকু কাজ সম্পন্ন হবে এ নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন কৃষকেরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে জগন্নাথপুরের ঝুকিপূর্ণ হাওরগুলোতে ৭৫ কিলোমিটার হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার শুরু
হয়। ৩৭ টি প্রকল্পে কাজের বরাদ্দ ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু হলে চলতি মাসের ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়নি।
সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সুনামগঞ্জের হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করে ৭ মার্চ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় সময়সীমা বৃদ্ধি করেন।
তবে উপজেলার জিলকার হাওরে ইটাখলা নদীর তীরে পরপর ৩টি প্রকল্পের কাজ অনেকটা এগোতে দেখা যায়। এই তিনটি প্রকল্প হচ্ছে- ৩৫,৩৬ ও ৩৭ নং প্রকল্প।
৩৫ নং প্রকল্পের সদস্য সচিব মিলাদ জিম্মাদার জানান, আমাদের প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশাবাদী দ্বিতীয় দফার সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শেষ হবে।
এদিকে, ফিডার-১ এর আওতাধীন উপজেলার শস্যভান্ডার খ্যাত নলুয়ার হাওরে বেশ কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। এ হাওরের বেশ কয়েকটি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা কৌসূলে নিজের ভাগে নিয়েছেন নলুয়ার হাওরে ৫ টি প্রকল্প। অথচ এসকল কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিব রয়েছেন তিনির নিজের ঘনিষ্ঠজন। এ পাঁচটি প্রকল্প হচ্ছে- ১৩,১৪,১৫,১৬ ও ১৭ নং প্রকল্প। সরেজমিনে এই প্রকল্প গুলোর কাজ ধীরগতিতে চলতে দেখা যায়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক কৃষক জানান, এক লোক একাধিক প্রকল্পে কলকাঠি নাড়লে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকেনা।
খাসিলা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক সোহেল আহমেদ বলেন, প্রথম বেঁধে দেওয়া সময়ে প্রকল্পগুলো কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। ২য় মেয়াদের কয়টি দিনে কাজ কতটুকু সম্পন্ন হবে এ নিয়ে শঙ্কিত রয়েছি আমরা।
এদিকে, মই হাওরস্থ ২০ নং প্রকল্প বেলেমাটির বাঁধে মরা ঘাস লাগানোর একটি নাটকীয়তা হলে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও ঘাস লাগানোর কাজ অদ্যাবধি কোনো প্রকল্পে হয়নি।
নলুয়ার হাওরের ২ নং প্রকল্প দাশ নোয়াগাঁও ও হরিনাকান্দি গ্রাম দিয়ে কামারখাল নদী সংল্গগ্ন। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ স্থানে মাটি ফেলা হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্য কতটুকু কাজ বাস্তবায়িত হবে- এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা। জানতে চাইলে এ পিআইসি’র সদস্য সচিব হাছন মিয়া বলেন, আমাদের কাজ চলমান। আশা করি খুব শিগগিরই মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হবে। এ হাওরের ৩ নং প্রকল্প দাশ নোয়াগাঁও গ্রাম দিয়ে কামারখাল নদী সংল্গগ্ন স্থানে । দাশ নোয়াগাঁও গ্রাম নিবাসী কৃষক ছানা মিয়া বলেন, সঠিক সময়ে কাজ না হলে বৃষ্টির সময় এখানে গাড়ি দিয়ে কোনোভাবেই কাজ করা সম্ভব নয়। মুঠোফোনে জানতে চাইলে প্রকল্পের সভাপতি রনধীর কান্তি রান্টু বলেন, আমরা আশাবাদী যথাসময়ে কাজ সম্পূর্ন হবে। আগাম বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে ও মাটি টিকে থাকার সম্ভাবনা কতটুকু- এই নিয়ে ও অভিযোগ কৃষকদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার মাঠ কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, ইতোমধ্যে ৮৫ ভাগ মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১০-থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে কাজ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Leave a Reply